ঠাকুরবাড়ির সাতকাহন
শান্তা শ্রীমানী
সে অনেক যুগ আগেকার কথা। প্রায় দুশো বছরেরও বেশি। শহরে তখনও জলের কল বসেনি। ভিস্তিওলা জল দিয়ে যায় চামড়ার মশকে ভরে। পথে পথে হেঁকে যায় বরফওলা, ফুলমালি। দুপুরবেলা চুড়িওলা হাঁকে চুড়ি চাই, খেলোনা চাই' বলে। ঠাকুরবাড়ির দাসী এসে অন্দরমহলে ডেকে নিয়ে যায় চুড়িওলাকে। অবনীন্দ্রনাথের ঠাকুমা যোগমায়া দেবী তখন বালিকা বধূ। চুড়িওলা তাঁর কচি হাতে টিপে টিপে পরিয়ে দেয় কাচের চুড়ি। দুপুরবেলা ছাদে তখন মেয়েদের আসর বসত। মধ্যমণি দেবেন্দ্রপত্নী সারদা দেবী। বাড়ীর মেজোকর্তা গিরীন্দ্রনাথ তখন মেতে আছেন গান, যাত্রা-নাটক নিয়ে।
বড়কর্তার ছেলে দ্বিজেন্দ্রনাথ ভোরবেলা ট্রাইসাইকেল চেপে ঘুরে বেড়ান ছাদে। তিনি তখন লিখছেন 'স্বপ্নপ্রয়ান' কাব্য। এদিকে বাড়ীর মেজোবৌ জ্ঞানদানন্দিনী এবং মেজোছেলে সত্যেন্দ্রনাথ উঠে পড়ে লেগেছেন ঠাকুর বাড়ির অবরোধ প্রথা ভাঙতে। বাড়িতে ঢুকছে নতুন যুগের হাওয়া। গুণেন্দ্রনাথের যুগে যে'নবনাটকে'র হাওয়া উঠল তাতে পাল তুলে ভেসে পড়েছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ও কাদম্বরী দেবী। সাথে নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথকেও। তিনতলার ছাদের নন্দন কাননকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠল 'ভারতী'র যুগ। কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুতে বুঝি মূল তন্ত্রী ছিঁড়ে পড়তে চায়। স্নেহ ভালবাসা আর আন্তরিকতা দিয়ে সে তন্ত্রী আবার জোড়া দিলেন কবিপত্নী মৃণালিনী দেবী।
এমনই অজস্র ঠাকুর বাড়ির স্বল্প পরিচিত চরিত্রদের ঘরোয়া জীবনের বর্ণময় চিত্র ফুটে উঠেছে 'ঠাকুরবাড়ির সাতকাহন'-এ।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.