বাবুই
স্মরণজিৎ চক্রবর্তী
সরযূ বহুদিন পরে ফিরেছে কলকাতায়। আর এসে দেখছে ওর রেখে যাওয়া শহর আর মানুষগুলো কেমন যেন পালটে গিয়েছে। তার ভালবাসার লাবণ্য আজ বিবাহিতা, জননী। একই বাড়িতে আছে লাবণ্যর তুতো বোন লাজনি, অতীত ও বর্তমানের নানান অন্ধকার ছাপিয়ে বেঁচে ওঠার চেষ্টা করছে। আছে নায়িকা হতে চাওয়া ইলাক্ষী। স্বপ্নপূরণের জন্য মানুষকে ব্যবহার করতে পিছ-পা হয় না, আবার নিজের অজান্তেই ব্যবহৃতও হয়ে চলে। আছে ইলাক্ষীর প্রেমিক নমন, তার নিরুপায় প্রেম ও আদর্শ নিয়ে। সমান্তরালে আছে রাজনীতির ঘোলাজলে সাঁতার কাটা রতিশ, যার বেপরোয়া যাপন ক্রমশ বিপদের মুখে ঠেলে দেয় তাকে। আর সেই আবর্তে না জেনেই জড়িয়ে যায় সরযূ, লাজনি, ইলাক্ষী ও নমন।
এই সবকিছুর বাইরে আছে এক বাবুই পাখি। নিজের বাসা বোনার কথকতা করতে করতে সে গল্প বলে এক মানুষী সমকালের। স্নেহ, হিংসা, ক্রোধ, ঘৃণা, ভয় ও প্রেমের সেই জটিল ঠাসবুনোটের ভিতরে ভিতরে চোরাপথে তবু ঠিক বয়ে চলে ভালবাসার সুতো। বাবুইপাখির বাসার গহিনে যে আরাম, মানুষী জটিলতার কেন্দ্রেও থাকে সেই আশ্রয়েরই খোঁজ, যার নাম ভালবাসা।