বেহড় বাগী বন্দুক
তরুণকুমার ভাদুড়ী
বেহড়' মানে গিরিপথ, 'বাগী' শব্দটির অর্থ বিদ্রোহী। চম্বলের উপত্যকায় বেহড়ের আনাচে-কানাচে বন্দুকহাতে দুর্ধর্ষ বাগী ডাকাতদের নিয়ে তরুণকুমার ভাদুড়ীর একদা-আলোড়ন-জাগানো বই- অভিশপ্ত চম্বল। এবার তরুণকুমার ভাদুড়ী কলমে বেহড়ের বন্দুকধারী বাগীদের চিরপুরনো আর চিরনতুন সমস্যাটাকে আরও একবার ভিতর থেকে দেখা। এবার তাঁর সন্ধানী আলো পড়েছে আরও বড় জায়গার উপরে। মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ আর রাজস্থানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের যাবতীয় ডাকাতদের নিয়ে তাঁর এই নতুন বই, 'বেহড় বাগী বন্দুক'। এবারের এই সমীক্ষায় আরও একটি গূঢ় উদ্দেশ্য ছিল তরুণকুমার ভাদুড়ীর। বিশেষভাবে তিনি লিখতে চেয়েছেন দস্যু-সুন্দরীদের সম্পর্কে। অভিশপ্ত চম্বলের সেই স্বনামধন্য রুস্তমজী যাদের সম্পর্কে। বলেছেন, 'বিউটিজ টার্নস্বী'। তরুণকুমার ভাদুড়ী অবশ্য সেভাবে বলতে চাননি। যেহেতু সংবেদনশীল এক লেখক তিনি জানেন সব মানুষই দেবশিশু হয় না। কিন্তু কখন আর কীভাবে পশু হয় মানুষ? পুতলী, হসিনা কোম, ফুলন- এইসব দস্যুসুন্দরী কি সবাই পশু হয়েছিল? এই বইতে তার উত্তরই খুঁজেছেন তিনি। পুলিশ রেকর্ড তন্নতন্ন করে ঘেঁটে তিনি খুঁজে বার করেছেন এদের প্রত্যেকের অতীত জীবনের তথ্য ও দস্যুতার খতিয়ান। অন্যদিকে অন্তরঙ্গভাবে মিশেছেন এদের অনেকের সঙ্গে। স্পর্শ করতে চেয়েছেন এদের মনের গভীরতম স্তরে জমে-থাকা ক্ষোভ-বঞ্চনা ও আক্রোশের সেই বীজটিকে যা এদের করেছে সমাজচ্যুত, ঠেলে দিয়েছে বেহড়ের গূঢ় অন্ধিসন্ধিতে, নামিয়ে দিয়েছে বাগীর ভূমিকায়, হাতে তুলে দিয়েছে বন্দুক। ১৯৬০ সালে প্রেমের বর্তিকা নিয়ে অভিশপ্ত চম্বলে আসেন বাবা বিনোবা ভাবে। ১৯৭২ সালে। জয়প্রকাশ নারায়ণ। বহু ডাকাতের হৃদয় পরিবর্তন ঘটেছে তখন, ঘটেছে বহু আত্মসমর্পণের ঘটনা। তবু কি শেষ হয়েছে ডাকাতির সমস্যা মছে গেছে চম্বলের অভিশাপ? না। আবার তৈরি হয়েছে নতুন বেহড়, নতুন বাগী। নতুন করে হাতে উঠেছে বন্দুক। এই যাবতীয় বেহড়-বাগী-বন্দুকের অজানা কাহিনি নিয়েই এই বই, এই রোমাঞ্চকর গল্পকথা। তথ্য যে কখন উপন্যাসের থেকেও রোমাঞ্চকর, তারই নতুন হদিশ জানাবে এই লেখা।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি