টমাস ম্যাচেল বেঙ্গল ইন্ডিগো কোম্পানিতে এক নীলকর হিসেবে যোগ দেন ১৮৪৬ সালে এবং থাকতে শুরু করেন গ্রামবাংলারই বিভিন্ন নীলকুঠিতে। নীলকর-জীবনের রোজনামচা তিনি লিখে রাখতেন তাঁর জার্নালে। সেই সঙ্গে জার্নালের পাতায় পাতায় আঁকতেন বাংলার গ্রাম্য জীবনের ছবি। উনিশ শতকের গ্রামবাংলার এমন প্রত্যক্ষ ও সচিত্র দৈনন্দিন ধারাবিবরণী বোধহয় আর একটিও নেই। রোজকার বর্ণনায় মূর্ত হয় সিপাহি বিদ্রোহেরও পূর্বের হাঁসখালি, ত্রিবেণী, বনগাঁ, পেট্রাপোল, বেনাপোল, যশোর, কৃষ্ণনগর, বড়গরিয়া, মুর্শিদাবাদের পটাকাবাড়ি গ্রাম। জীবন্ত হয়ে ওঠেন ইতিহাসপ্রসিদ্ধ বিশে ডাকাত, তিতুমির, ইয়াং বেঙ্গল কিংবা ইতিহাস-বিস্মৃত মিস্টার ফোরলং, নীলকুঠিতে শাস্ত্র আলোচক নন্দদুলাল পণ্ডিত, ফারসি ভাষার পণ্ডিত ওর্শিনাথ মুন্সি, নীলকুঠির ডাক্তার দেব্বোনাথ ধর, চির-অভাগিনী জেসি ওয়ারিংটন বা নীলকুঠিতে চাকরি ভিক্ষার্থী শিক্ষিত যুবক উমাসুন্দর মুখার্জি। টমাস ম্যাচেলের পাণ্ডুলিপি অপ্রকাশিত হয়ে রক্ষিত ছিল ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে। সেই পাণ্ডুলিপি প্রথম প্রকাশিত হল বাংলায় অনূদিত হয়ে। তার সঙ্গে সংযোজিত হল প্রয়োজনীয় ঐতিহাসিক তথ্য ও টীকা। টমাস ম্যাচেল বাংলাকে ভালবেসেছিলেন, বলেছিলেন বাংলাই তাঁর বিধিনির্দিষ্ট দেশ। বহুকাল পর সেই বাংলাতেই প্রকাশিত হল তাঁর দেখা গ্রামবাংলার প্রতিদিনের যাপনচিত্র।
এই ওয়েবসাইটের কার্যকারিতার জন্য আমরা কুকি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও ওয়েবসাইটের ট্রাফিক সঙ্ক্রান্ত তথ্যের জন্য আমরা কুকির সাহায্য নিই। নিচের বটন ক্লিকের মাধ্যমে আপনি সমস্ত রকমের কুকি ব্যবহারে সম্মতি জানাচ্ছেন।