দুরন্ত দুপুর বিষাদ সন্ধ্যা
ডা. সৌম্য ভট্টাচার্য
১৮৯৯ থেকে ১৯১০— সৌম্য ভট্টাচার্যের বাংলা রেনেসাঁস উপন্যাসমালার উপজীব্য ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে ব্যাপ্ত এই কালখণ্ড। কলকাতাকেন্দ্রিক ভারতীয় নবজাগরণের ক্রান্তিকাল এবং ক্রমাবসান সেই সময়েই। সংগীত, সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান গবেষণা, ধর্মান্দোলন, সমাজ ও স্বদেশ চেতনা— সব কিছুতেই প্রত্যক্ষ হয়েছিল যে জাগৃতি, প্রথমাবধি তা ছিল দ্বন্দ্ব ও মিলন, সহমত ও সংঘর্ষে মুখর। উপন্যাসের আঙ্গিকে ধৃত এই মহাকাব্যিক আখ্যানের মূল নায়ক সময় আর সেই সময়ের বিভিন্ন বিন্দুতে নানান ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, জগদীশচন্দ্র, নিবেদিতা, কার্জন, কিচেনার-সহ সমসাময়িক প্রায় সকল যুগন্ধর ব্যক্তিত্ব। এঁদের অনেকের সঙ্গেই পাঠকের পরিচয় ঘটেছে ইতিমধ্যে প্রকাশিত প্রথম দুই খণ্ড ‘নতুন আলো’ এবং ‘সোনালি সকাল’-এ। তৃতীয় খণ্ড ‘দুরন্ত দুপুর’ এবং চতুর্থ খণ্ড ‘বিষাদ সন্ধ্যা’ একত্রে প্রকাশিত বর্তমান সংস্করণে। খুব সচেতন ভাবেই এই নামকরণের মাধ্যমে একটি জাতির জীবন-প্রভাত, জীবন-মধ্যাহ্ন এবং জীবন-সন্ধ্যার প্রতি দিকনির্দেশ করা হয়েছে। কোনও-না-কোনও ইতিহাসপুরুষের প্রয়াণ বা প্রস্থান সূচিত করছে প্রতিটি খণ্ডের সমাপ্তি। প্রথম খণ্ড ‘নতুন আলো’-র সমাপন ১৯০২ সালের চৌঠা জুলাই স্বামী বিবেকানন্দের জীবনাবসানে। দ্বিতীয় খণ্ড ‘সোনালি সকাল’-এর সমাপ্তি ১৯০৫ সালের উনিশে জানুয়ারি মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণে। ১৯০৭ সালের অক্টোবর মাসে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শেষ হচ্ছে তৃতীয় খণ্ড ‘দুরন্ত দুপুর’— যে সময়ে তীব্র হচ্ছে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন। বাংলায় উগ্রপন্থী রাজনীতির সূচনা চতুর্থ খণ্ড ‘বিষাদ সন্ধ্যা’-য়। ১৯১০ সালের এপ্রিলে অরবিন্দের বাংলা ত্যাগ তথা পণ্ডিচেরি গমন দিয়ে পরিসমাপ্তি চার খণ্ডে রচিত সুবিশাল এই উপন্যাসমালার, যার সংযোগসূত্র দুরন্ত বালক থেকে অবাধ্য কিশোর এবং ক্রমে নির্ভীক, নির্মোহ যুবা হয়ে ওঠা আর এক ঐতিহাসিক চরিত্র— পরবর্তীকালের সুবিখ্যাত লেখক তথা চলচ্চিত্রকার— প্রেমাঙ্কুর আতর্থী।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি