পালাপুরাণ
ভগীরথ মিশ্র
দিনের শেষে সন্ধে নেমে এলেই, অন্ধকার গ্রামগুলোর বুকে জ্বলে ওঠে সারি-সারি হ্যাজাক আর ডে'লাইট। আলোর টানে উন্মাদ হয়ে চতুর্দিক থেকে ছুটে আসে হাজার হাজার মানুষ। বর্ণাঢ্য শামিয়ানার তলায় একচিলতে চৌকোনো আসর। মুখে রঙ মেখে, গায়ে ঝলমলে পোশাক চড়িয়ে ওইসব আসরে একদল মানুষ সারাক্ষণ দৈবভাষায় কথা বলে যায়। সারাক্ষণ হেসে-কেঁদে, নেচে-গেয়ে, হাজার-হাজার মানুষকে গাঢ় নেশায় বুঁদ করে রাখে। তারপর, আসর ভাঙলে-পর, ক্লান্ত-বিধ্বস্ত শরীরটাকে এলিয়ে দেয় কোনও স্কুলবাড়ি'র হলঘরে পেতে রাখা শতরঞ্জির ওপর। ঘুমের অতলে তলিয়ে যেতে-যেতেও মানুষগুলির মনের আয়নায় হয়তো-বা ক্ষণিকের তরে ভেসে ওঠে বউবাচ্চা, ঘর-গেরস্থালির টুকরো-টাকরা ছবির কোলাজ। হয়তো-বা মনের কোণে অস্পষ্টভাবে উঁকি মারে শয্যাশায়ী বিধবা মা, নিঃসঙ্গ-যুবতী স্ত্রী কিংবা সদ্যোজাত সন্তানের নিষ্পাপ মুখগুলি।
এইভাবে, এক গাঁ' থেকে অন্য গাঁয়ে। এক ঘাট থেকে অন্য ঘাটে বাংলা-বিহার-ওড়িশা-আসামের আসরে আসরে মুখে রঙ মেখে যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় রাতের রাজারানি'র দল।
এরা যাত্রাওয়ালা। গ্রাম-বাংলার এইসব ঐতিহ্যবাহী কুশীলবদের নিয়ে এই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী ভগীরথ মিশ্র'র ধ্রুপদী উপন্যাস 'পালাপুরাণ'।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি