রবি-কথা
প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়
"রবি-কথা লিখবার জন্য অনুরোধ আসে কলকাতা আকাশবাণী থেকে তার ব্যবস্থা করেন শ্রী অমল হোম- তখন রবীন্দ্রনাথের উৎসব সূচী প্রণয়নের জন্য তিনি দিল্লী আকাশবাণীর সহিত যুক্ত ছিলেন।
তাঁর প্রেরণা ও উৎসাহেই এটি লিখিত হয়।" এই গ্রন্থের ভূমিকাতেই এ-কথা লিখেছেন রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষ পূর্তির প্রাক্কালে প্রভাতকুমারের লেখা এই রবীন্দ্রজীবনীটি তাঁর একমাত্র কিশোর-রবীন্দ্র-জীবনী। প্রভাতকুমারের পৌত্র শ্রী সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন- "আমার স্মৃতিতে আছে পিতামহ বলেছিলেন যে কিশোর বয়সীদের উপযুক্ত রবীন্দ্র জীবনের একটি সহজবোধ্য আকর্ষণ ভাষ্য তথা প্রতিবেদনই তাঁর এই রচনার উদ্দেশ্য ছিল।" মোট ছ'টি স্তবকে বিভক্ত এই কিশোরপযোগী রবীন্দ্র-জীবনীটি। রবীন্দ্রনাথের জন্মবর্ষ থেকে ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ তারিখে তাঁর মহাপ্রস্থানের দিনটি পর্যন্ত ব্যাপ্ত এই রবি-কথা। আশি বছরের বৈচিত্রপূর্ণ জীবনটিকে সামগ্রিকভাবে একটি পটে আঁকা ছবির মতো করে প্রভাতকুমার ফুটিয়ে তুলেছেন এই গ্রন্থে। রবীন্দ্রনাথের জীবনটিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানতে আট থেকে আশি সবারই এই গ্রন্থের পাঠ অবশ্যাম্ভাবী। রবীন্দ্রজীবনের প্রবাদপ্রতিম জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের এই চিরনূতন গ্রন্থটিকে পাঠক-পাঠিকার হাতে তুলে দিতে পেরে 'বিচিত্রা গ্রন্থন বিভাগ'ও গৌরবান্বিত। নিঃসন্দেহে রবীন্দ্রপ্রেমী বাঙালির প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন এই গ্রন্থ।
লেখক পরিচিতি :
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১১ শ্রাবণ ১২৯৯ (২৫ জুলাই ১৮৯২), নদীয়ার রাণাঘাটে। কৈশোর কেটেছে গিরিডিতে। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী সভায় যোগদানের জন্য সরকার অনুমোদিত স্কুল থেকে নাম কাটা যায়। পরে অন্য স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেন। অসুস্থতার জন্য উচ্চশিক্ষায় ছেদ পড়ে। ১৯০৯ থেকে শান্তিনিকেতনে, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের স্নেহচ্ছায়ায়। ১৯২৯-এ শুরু করেন তাঁর জীবনের বৃহত্তম কীর্তি 'রবীন্দ্রজীবনী' রচনা। বিশ্বভারতী গ্রন্থাগারটিকে বিশিষ্ট জ্ঞানকেন্দ্রে রূপান্তরিত করায় ও ত্রিশ থেকে চল্লিশ দশকের শান্তিনিকেতনের পারিপার্শ্বিক পল্লী অঞ্চলের উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয়।
অজস্র সম্মান, অসংখ্য পুরস্কার। রবীন্দ্রপুরস্কার-১৯৫৭-তে। বিশ্বভারতীর 'দেশিকোত্তম' উপাধি ১৯৬৫-তে। জগত্তারিণী স্বর্ণপদক, আনন্দ পুরস্কার, রবীন্দ্রভারতীর রবীন্দ্রপুরস্কার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট, সাহিত্য আকাদেমির রবীন্দ্র-শতবার্ষিকী পুরস্কার, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রভারতীর ডি. লিট, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট-এমন অনেক। ১৯৮১-তে পদ্মভূষণ।
প্রয়াণ: ৮ নভেম্বর ১৯৮৫
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.