'পৃথিবী এখন ক্রমে হতেছে নিঝুম।
সকলেরই চোখ ক্রমে বিজড়িত হয়ে যেন আসে; যদিও আকাশ সিন্ধু ভরে গেল
অগ্নির উল্লাসে; যেমন যখন বিকেলবেলা
কাটা হয় ক্ষেতেল গোধূম চিলের কান্নার
মতো শব্দ করে মেঠো ইঁদুরের ভিড় ফসলের ঘুম
গাঢ় করে দিয়ে যায় — এইবার কুয়াশায়
যাত্রা সকলের। সমুদ্রের রোল থেকে একটি
আবেগ নিয়ে কেউ নদীর তরঙ্গে – ক্রমে
- তুষারের স্তূপে তার ঢেউ। একবার টের
পাবে – দ্বিতীয়বারের সময় আসার আগে নিজেকেই পাবে না সে
টের।'
-
স্বয়ং জীবনানন্দ দাশ যখন কোনো কাব্যগ্রন্থের নামকরণ, ভূমিকা, সূচি তৈরি করেও সেই বই প্রকাশ করেন না, পাঠক হিসেবে আমাদের আগ্রহ জন্মায়। বই প্রকাশ না করার সম্ভাব্য কারণগুলি খুঁজে দেখতে ইচ্ছে হয়। সবচেয়ে বড়ো কথা, জীবিতকালে প্রকাশিত একমাত্র 'শ্রেষ্ঠ কবিতা' বাদ দিলে ৬৫টি কবিতার কাছাকাছিও কবিতা আর কোনো কাব্যগ্রন্থে সংকলিত হয়নি। এই কাব্যগ্রন্থের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কবিতা অন্য কোনো সংকলনে নেই, এমনকি গ্রন্থভুক্ত অবধি হয়নি। তাছাড়া আছে পাঠভেদ সমস্যা, কবিতার নামকরণের জটিলতা ও পাণ্ডুলিপির সঙ্গে ভিন্নতা। পরিশিষ্টে যোগ হয়েছে সূচি বহির্ভূত কিন্তু প্রাসঙ্গিক কিছু কবিতা। জীবনানন্দ দাশ সারাজীবন ধরে মহাকবিতা লিখতে চেয়েছেন। 'শীতসবিতা'-র মুখবন্ধ কবিতাগুলির একটা সবিশেষ অবস্থান আছে জীবনানন্দর কবিতার বিবর্তন ধারায়। একটা সুসম দার্শনিক পরিণতির দিকে যাত্রা লক্ষ করা যায় কাব্যগ্রন্থটির মধ্যে। হদিশ পাওয়া যেতে পারে থিমেটিক ইনটিগ্রিটির। এখানেই হয়তো বইটি গড়ে তোলার সার্থকতা।
বই- শীতসবিতা
কবি- জীবনানন্দ দাশ
সম্পাদনা - গৌতম মিত্র
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি