আগাছার শিকড়
বিজয় শঙ্কর মুখোপাধ্যায়
বিল্টু দুটো খুনের কথা বলল। এটাও বলল টাকা ফেরত দিয়ে খুনের হাত থেকে বেঁচে গেছে এমন কাউকেই এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সব শুনে তাতান বলল,
– পুলিশ তাহলে খুন দুটোর কিনারা করতে পারেনি। দুটো খুনই হয়েছে একইভাবে আর তোমার ধারণা দুটো খুন একই হাতের। বাঁকুড়াতে এরকম খুন আগেও এক-আধটা হয়েছে কিন্তু সেগুলোরও কোনও কিনারা হয়নি। বিষ্ণুপুরের খুনের ঘটনার দিন ওই দুটো ছেলের একটাকে ওখানে বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে।
বিল্টু চোখ বড় বড় করে তাতানের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। খুবই উৎসাহিত হলো, বাহ, তুই চিন্তাগুলোকে বেশ গুছিয়ে নিতে শিখেছিস তো। এবার বল তো ছেলে দুটোকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। এরা এদিকে কোথায় ডেরা বেঁধেছে, নাকি পাটনা থেকে এসে কাজ সেরে আবার পাটনা পালিয়ে যাচ্ছে?
তাতান ভাবল কিছুক্ষণ। বলল,
– সঠিক বলা মুশকিল, বিল্টুদা। ব্যাপারটা ভাবার আছে...
উক্ত অংশটি বিজয় শঙ্কর মুখোপাধ্যায় রচিত "আগাছার শিকড়" বইটি থেকে নেওয়া । ঋতবাক সম্পাদিত এই বইটি একটু অন্য গোত্রের। এটি গোয়েন্দা গল্প। নাটকে বা সিনেমায় কমিক চরিত্রে অভিনয় দেখতে যেমন সোজা, সফল অভিনয় ততটাই কঠিন। গল্পের মধ্যে সফল গোয়েন্দা গল্প লিখতেও সেরকম মুন্সিয়ানা লাগে। গল্প যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, কিছু লোভী মানুষ তাৎক্ষণিক লাভের জন্য মানুষ খুন করতেও পিছিয়ে যাচ্ছে না, তেমনি সঙ্গে সঙ্গে চাপের মধ্যে থেকেও কিছু পুলিশ অফিসার একটি বড় ক্রিমিনাল গোষ্ঠীর চক্রান্ত ভাঙবার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, এই সব পূর্বাপর কাহিনী বলে যাওয়ার মধ্যেও একটি যোগসূত্র রেখে যাওয়া - যাতে গল্পের বিশ্বাস যোগ্যতা না হারায় এবং সাক্ষ্য প্রমাণও মিলে যায়।