ব্যাক্তিপুরুষেরা
দেবেশ রায়
কোনও ব্যক্তির সফরের চড়াই-উতরাই শুধু ইতিহাসের পতন-অভ্যুত্থানের সঙ্গেইই অন্বিত নয়। সমাজ-সভ্যতা নিরপেক্ষ ভাবে ব্যক্তির নিজেরও থাকে ব্যক্তি হয়ে ওঠার দায়। এ দায় কেউ তার উপরে চাপিয়ে দেয় না, বরং সে নিজেই নিজের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ে। এই নিজেই নিজের ব্যক্তি হয়ে ওঠার তাড়নায় স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘নিজের ভেতরকার এই প্রাণময় রহস্যের কথা’, ‘প্রাণের অন্তরতর প্রাণের কথা’, ‘সৃষ্টি সাধনকারী একাগ্র লক্ষ নির্দেশ করে চলেছেন একটি গূঢ় চৈতন্য, বাধার মধ্যে দিয়ে, আত্মপ্রতিবাদের মধ্য দিয়ে।' দেবেশ রায় লিখছেন, ‘পরাধীনতা আমদের মতো দেশকে যে অনিবার্য আত্মবৈপরীত্যের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, ফ্যাসিবাদ ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ইউরোপ ও আমেরিকার মতো দেশকেও আর এক ধরনের আত্মদ্বন্দ্বের ভেতর ফেলে দিয়েছিল। বিজ্ঞানের বা ইতিহাসের যে যুক্তিকে সাম্রাজ্যবাদ কলোনি কায়েম করে, ক্রীতদাস ব্যবসা চালু করে, সারা পৃথিবীকে ঢেলে সাজায় একমাত্র ইউরোপীয় মডেলে, সেই যুক্তিতেই ছিন্নমস্তা ইউরোপীয় সভ্যতা ইউরোপের মাটিতেই ফ্যাসিবাদের জন্ম দেয় আর সেই ফ্যাসিবাদকে চিনে উঠতেও পশ্চিম ইউরোপের গণতন্ত্রী বুদ্ধিজীবীদের ও লেখকদের কখনও-কখনও কেটে যায় এক দশক।' ব্যক্তিপুরুষের তাড়না যেমন কয়েক লাইনে বোঝানো শক্ত, তেমনই স্বব্যক্তিত্বকে প্রতিপক্ষ রূপে দেখার মূল্য অনেক। মার্কস, গ্রামশ্চি, পিকাসো এবং মহাত্মা... দেবেশ রায়ের লেখনীতে দাঁড়িয়ে আছেন ব্যক্তিপুরুষেরা, তাঁদের ব্যক্তি হয়ে ওঠার অনন্য আখ্যান।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.