ডাকাউয়ের সেই বন্দি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার ষাট লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন। তখন হিটলারের জার্মানিতে ইহুদি হত্যার জন্য আলাদা করে কোন আদেশের প্রয়োজন হত না। হিটলারের একটা ঢালাও নির্দেশ ছিলই- “ইহুদি হলেই গুলি করে মার আগে”। কোন জবাবদিহি করতে ত হবেই না। বরং ইহুদি বিনাশে অনীহা প্রকাশ করলেই জবাবদিহি করতে হতো। হিটলারের ঘোষিত দুই শত্রুর নাম – ইহুদি এবং বলশেভিক। ইহুদি নিধনের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ছিল জার্মানিতে। এদের মধ্য প্রধান দুটি। এক, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প যা প্রকৃতই মৃত্যু শিবির। দ্বিতীয়টি হলো গ্যাস চেম্বার অর্থাৎ বন্দিদের ঘরে বিষাক্ত গ্যাস বাইরে থেকে ঢুকিয়ে মেরে ফেলা। হিটলারের নাৎসি পুলিশ, মানে গেষ্টাপো বাহিনির নিত্যদিন অন্যান্য কাজের সংগে একটা কাজ করতে হত। খুঁজে খুঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইহুদিদের ধরে এনে কন্সেনট্রেশান ক্যাম্পে বন্দি করে রেখে অত্যাচার করে তিল তিল করে মেরে ফেলা। বন্দির সংখ্যা বেশী হলে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মেরে ফেলা। এতে একদিনে প্রচুর মেরে ফেলা যেত। এ ছাড়া তৃতীয়টি হল ফায়ারিং স্কোয়াড। লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করা। কন্সেন্ট্রেশান ক্যাম্পগুলোর মধ্যে একটা ছিল ডাকাউ বা ডাকা-আউ ( DACHAU)।
এ কাহিনির মূল চরিত্র পল ফ্যাকেনহাইম একজন ইহুদি। ডাকাউ কন্সেন্ট্রেশান ক্যাম্পের বন্দি। আশ্চর্যের ব্যাপার হল প্রত্যেকবারই মৃত্যুর মুহূর্তে পল ফ্যাকেনহাইম অদ্ভুত ভাবে বেঁচে যান। বেঁচে যান না, পলের মনে হত কেউ তাঁকে বাঁচিয়ে নিয়ে চলেছেন আড়াল থেকে। কে তিনি? কেন তিনি সামনে না এসে আড়াল থেকে তাঁকে সাহায্য করে চলেছেন? কি তাঁর উদ্দেশ্য ? কি করাতে চাইছেন পলকে দিয়ে তিনি?
কৌতূহলটা পাঠকেরও। এ কাহিনির শেষে এসে পাঠক জানতে পারবেন কে সেই ব্যক্তি এবং কেন তিনি বারবার অবধারিত মৃত্যুর হাত থেকে পলকে বাঁচিয়ে গেছেন ক্রমাগত। কি করাতে চাইছিলেন তিনি পলকে দিয়ে?