গজাননবাবু ও কৃতজ্ঞ চোর

(0 পর্যালোচনা)

লিখেছেন/সম্পাদনা করেছেন:
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশক:
খসড়া প্রকাশনী

দাম:
₹200.00

পরিমাণ:

মোট দাম:
শেয়ার করুন:

গজাননবাবু ও কৃতজ্ঞ চোর

লেখক - উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ - শুভম ভট্টাচার্য 

"গজাননবাবুর বাড়িতে চুরি হয়ে গেল। সেদিন সারারাত ঝুপঝুপ বৃষ্টি পড়ছিল। রাতে সবাই অকাতরে ঘুমোচ্ছিল। গজাননবাবুও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। চোর এল। জানালার রড কেটে ভেতরে ঢুকল। হাতড়ে হাতড়ে কী যেন খুঁজল। গজাননবাবু হাঁ করে নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। চোরের একাগ্রতায় বিঘ্ন ঘটচ্ছিল। তবু সে নিরুপদ্রব গৃহস্থকে জাগাতে চায়নি। চোর যে পথে এসেছিল সেই পথেই চলে গেল। বাকি রাত ঠাণ্ডায় ঠাণ্ডায় নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে সকালে উঠে গজাননবাবু অবাক! ঘরে তাণ্ডব হয়ে গেছে। গজাননবাবুর ঘরেই সব লন্ডভন্ড হয়েছে! পাশের ঘরে নয়, ড্রইংরুমে নয়, রান্নাঘরে নয়।

গজাননবাবুর ঘর থেকে চোর কী কী নিল? পুলিশে খবর দিলে তারা এসে সেই প্রশ্নই করল। গজাননবাবু বলবেন কী? তিনিই তো জানেন না। পুলিশে খবর দিয়ে তিনি কর্তব্য সারলেন বলা যায়। কর্তব্য! কেন? আরে চোর, ডাকাত, খুনি, বদমাইস, জোচ্চোর-সবাই কিছু না কিছু করে খায়। সেক্ষেত্রে কারুর পেশাগত ব্যাপারে তিনি কি বাধা দিতে পারেন? অতএব যা গেছে তা যাক। পুলিশ জানতে চাইল, 'ঘরে কী কী ছিল বলুন তো?'

গজাননবাবু বললেন, 'যা যা দেখতে পাচ্ছেন সবই।' পুলিশ দমবার পাত্র নয়, 'আর যা যা দেখতে পাচ্ছি না সেগুলো?'

গজাননবাবু বললেন, 'দেখতে হবে।'

তা দেখা হল। দেখে বোঝা গেল লুকোনো টাকা পয়সা, ঘড়ি, সোনার চেন, ব্যাংকের কাগজপত্র কিছুই চোর নেয়নি। ছাতা, টর্চও না। দামি জামাকাপড় নয়, শীতের পোশাক নয়। বাসনকোসন, জুতো, ঘড়ি? নাঃ। তাহলে চোর নিল কী? আর যদি না নিল তো এল কেন? ঢুকল কেন? পুলিশের প্রশ্নে প্রায় জর্জরিত হলেন গজাননবাবু। তাহলে আমাদের ডাকলেন কেন? সময়ের দাম নেই না কি?

গজাননবাবু মরমে মরে গেলেন। ঠিকই তো! যদি কিছু নাই নিল তাহলে কষ্ট করে ঢুকল কেন? যদিও তাঁর ঘর একেবারে একতলায়। জানলার রড কাটা কোনও ব্যাপার নয়। রডের বয়স প্রায় একশ বছর। একটু বেঁকিয়ে দিলেই হত। আর তাঁর ঘরে মোট টাকা ছিল দশ হাজার। সোনার চেনটা তাঁর। তবে তাতে সোনা খুব অল্পই। ঘড়ি, ছাতা, জুতো, জামাকাপড় সবই সাধারণ-কম দামি।

হয়ত সে কারণেই চোর কিছু নেয়নি। হয়ত সে গজাননবাবুকে করুণা করেছে। ভারি দয়ালু ভাব। সহযোগী চোর। চোর খুব সদাশয়। সেই অর্থে সে সাধারণ নয়-মহান চোর। গজাননবাবু ভাবলেন- চোর ভারি ভালমানুষ। মনে মনে তিনি চোরের প্রশংসা না করে পারলেন না।

গজাননবাবুর আলমারি থেকে কৌটো বের করে পুলিশ ভগবতী মারি বিস্কিট খেল। শুকনো খেজুর ও কিসমিস খেল। জল খেয়ে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে অফিসার চলে গেলেন। যাবার সময় বলে গেলেন, 'আবার ডাকবেন, তবে বিনা কারণে ডাকবেন না। খাবার দাবার ব্যাপার থাকলে অবশ্যই ডাকবেন। আপনার ডাক পেলেই ছুটে আসব।' পুলিশ চলে গেল। গজাননবাবু ভাবলেন বাঁচা গেল। বরং চোর আসুক কিছু নিক বা কিছু না নিয়ে চলে যাক-সে তো ভাল। হয়ত চোরের দারুণ অনুশীলন দরকার। হয়ত সে দীর্ঘকাল বাদে আবার কাজে নেমেছে। আপাতত তিনি আর কিছুই ভাববেন না। তিনি উঠবেন। কাজ করবেন। ঘুরে বেড়াবেন।" 

গজননবাবুর বাড়ি থেকে তাহলে চোর নিল টা কী? তার উত্তর লুকিয়ে আছে এই বইতে। সেই সঙ্গে আছে এমনই স্বাদের আরও পঁচিশটি গল্প। যেগুলো সন্দেশ সহ একাধিক জনপ্রিয় কিশোর সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। 

এই বইয়ের জন্য এখনও কোন পর্যালোচনা নেই

বই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা (0)

প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য

অন্যান্য প্রশ্নাবলী

কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি

Boier Haat™   |   © All rights reserved 2024.