গোয়েন্দা গন্ডালু সমগ্র ২
নলিনী দাশ
গোয়েন্দা গণ্ডালুদের নিয়ে মোট ২৯টি গল্প প্রকাশিত হয় ৷ প্রথম খণ্ডে ইতিমধ্যে ১৪ টি সঙ্কলিত হয়েছিল। বাকি ১৫ টি গল্প এখন সঙ্কলিত হল দ্বিতীয় খণ্ডে।
নতুন পাঠকদের জন্য বলি, চারটি স্কুলের মেয়ে কালু (কাকলি চক্রবর্তী), মালু (মালবিকা মজুমদার), টুলু (টুলু বোস) ও বুলু (বুলবুলী সেন) একটি বোর্ডিং স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে ও হোস্টেলের একই ঘরে থাকে। ওরা রহস্য সমাধান করতে ভালবাসে। আর ওরা যেখানেই যায় সেখানেই কোনও না কোন রহস্য খুঁজে পায় ও তার সমাধান করে। ওদের স্কুলের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সীমান্তে অবস্থিত এক কাল্পনিক অঞ্চলে। “রঙ্গনগড়ের রহস্য” গল্পের মধ্যে অঞ্চলটির এক মানচিত্র দেওয়া হয়েছে। লেখিকার বাবা অরুণাথ চক্রবর্তী লেখিকার ছেলেবেলায় (অর্থাৎ, ১৯২০-র দশকে) বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিসে কাজ করতেন—তাঁর কর্মস্থল ছিল হাজারিবাগ, ধানবাদ, গয়া ইত্যাদি ছোট ছোট শহরে । হাজারিবাগ অঞ্চল লেখিকার বিশেষ প্রিয় ছিল। তাই গণ্ডালুদের স্কুলের আশেপাশের কাঞ্চনপুর-ঝাউতলা-দেওদারগঞ্জ-রঙ্গনপাহাড়ের বর্ণনাতে লেখিকার ছেলেবেলার হাজারিবাগ-ছোটনাগপুর অঞ্চলে বেড়াবার আনন্দের অভিজ্ঞতার ছাপ পড়েছে।
নলিনী ও অশোকানন্দ বেড়াতে খুব ভালবাসতেন। ১৯৪৮ থেকে শুরু করে প্রায় চল্লিশ বছর ধরে প্রায় প্রতি বছর বার দুয়েক বেড়াতে গিয়েছেন ওঁরা। আমার খুব ছোটবেলায় একবার গেছিলাম ঋষিকেশ, লছমনঝোলা, মুসৌরি ঘুরতে।
কুলু-মানালী (“গণ্ডালু ও হিড়িম্বাদেবী রহস্য”), গোয়া (“ডন পেরেরার দ্বীপ”) ও মাউন্ট আবু (“মাউন্ট আবুর রহস্য”) অবশ্য ওঁরা নিজেরাই গেছিলেন। বেড়াবার সময়ে লেখিকা যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছেন এবং পরে গল্প লেখার সময়ে তা কাজে লাগিয়েছেন। এই সঙ্কলনের নয়টি গল্পে আছে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা ৫৫ টি ছবি ও ৯ টি নামাঙ্কণ । গণ্ডালু গল্প সন্দেশের পাঠক-পাঠিকাদের প্রিয় জেনে শেষের দিকের চারটি গল্পে তিনি ছবি এঁকেছেন প্রচুর সংখ্যায়।
নলিনী দাশ (১৯১৬-১৯৯৩) : তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী, তিরিশের দশকের মাঝামাঝি থেকে কলকাতার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেন ও অধ্যক্ষা ছিলেন । ৪০ ও ৫০এর দশকে খুদে গোয়েন্দাদের নিয়ে দুটি গল্প লেখেন । ১৯৬১তে সত্যজিতের “সন্দেশ”এ নিয়মিত গল্প লিখতে শুরু করেন । লিখেছেন বেশ কিছু রোমাঞ্চকর গল্প । তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয় গোয়েন্দা গণ্ডালুর গল্প-উপন্যাস, চারটি স্কুলের ছাত্রী যাদের প্রত্যেকের ডাকনামের শেষ “লু” দিয়ে । মোট ২৯টি গণ্ডালু কাহিনী পরে সংকলিত হয়েছে দুটি খণ্ডে । পরে তিনি ভাই সত্যজিতের ছেলেবেলার গল্প খুব সরস করে লেখেন । তিনি বিদ্যাসাগর পুরষ্কারও অর্জন করেন । তাঁর নাম “সন্দেশ”-এর যুগ্ম সম্পাদক ছিল প্রায় দুই দশক, যদিও এর আগে আরও এক দশক “সন্দেশ”-এর দপ্তর তাঁর বাড়িতেই ছিল ।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি