বই - কোঠাবাড়ি : দাস্তান-এ-দোজখ
লেখিকা - মৌমিতা ভৌমিক
“দিল কী ভিরানী কা ক্যায়া কিসসা কহে,
ইয়ে নগর সে মর্তবা লুটা গ্যয়া”
নির্বাসিত নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের হাত ধরে মেটিয়াবুরুজের কোঠাবাড়িগুলোর জলসাঘর হতে বাইজিদের গজলের সুর আছড়ে পড়ে থমথমে, নিথর রাতের চারদিকে। আতর আর জুঁইয়ের গন্ধমাখা জলসাঘর আসলে এক দোজখ। যেখানে মনের বদলে শরীর বিনিময় হয়, হৃদয় ভাঙে, হৃদয় পোড়ে। কোঠাবাড়ি আর তার বাসিন্দাদের জীবনে পড়ে থাকে শুধুই একাকীত্ব, অসীম শূণ্যতার দোজখনামা।
গৃহস্থের ঘর হয়, সংসার হয়, তুলসীতলা হয়। আর তবায়েফের হয় কোঠাবাড়ি। ভেঙে যাওয়া ভালোবাসা আর নূপুরের শব্দ কোঠাবাড়ির পাঁজরের খাঁজে খাঁজে জমে থাকে গল্প হয়ে। রাতের প্রতীক্ষায় দিন পার করে কোঠার বাসিন্দারা। কোঠাবাড়িতে কত এমন রাত যে তার গর্ভের অন্ধকারে ইমারত বানিয়েছে প্রেম, বিচ্ছেদ, লোভ আর হিংসার, তার কোনো হিসেব নেই। আবার এই কোঠাবাড়ি সাক্ষী থেকে যায় দেশভাগের, সন্ত্রাসেরও।
এই উপন্যাসের মূল চরিত্র মোহরজান ছিলেন একজন কাঞ্চনী। জলসাঘরের ঠমক, ঝাড়লণ্ঠন, দামী ফরাস, তানপুরা আর সারেঙ্গীর ছড়ের জাঁকজমকের আড়ালে ছিল তাঁর নগ্ন জীবন। রিপোর্টার অরিন্দম চৌধুরীর কলমে মোহরজানের স্বপ্ন, যন্ত্রণা, বিদ্রোহ---- ছবির মতো ফুটে ওঠে। নিজের জীবনের গল্প বলা বড় কঠিন এক কাজ। মোহরজান নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করে, সেই কঠিন কাজটাই করেছেন। মোহরজানের জীবনের রক্তাক্ত গল্পে অরিন্দম একলা হয়ে যেতে থাকে। অরিন্দমের কাছে এই গল্প কেবলই এক মানুষের গল্প, বাইজি বা তবায়েফের নয়। এই গল্প দাস্তান-এ-দোজখ।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.