সপ্তপর্ণী
কোয়েল ভট্টাচার্য্য
এক আদিম অন্ধকার অরণ্যবিবরে অভিচারমত্তা যক্ষিণীকে অভিশাপ দিয়ে ব্রাহ্মণ অগ্নিব্যাস দেহত্যাগ করলেন। সেই শাপমোচনার্থ গয়াশিরের শিখরে তিন যুগে এসে দাঁড়ালেন তিন যুগাবতার। রাম, কৃষ্ণ, এবং গৌতম বুদ্ধ; ভারতভূমির অধ্যাত্মগগনে ভাস্বরতম তিন তাপসপুরুষের কিংবদন্তীর সঙ্গে গয়াক্ষেত্র অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে। সেসব কিংবদন্তী এক সুতোয় গাঁথতেই বিনির্মাণ এ কল্পকাহিনির।
আবার নিছক বিনির্মাণ ভেবে নিলে সপ্তপর্ণীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। কারণ বিনির্মাণের জন্য সপ্তপর্ণী লেখা নয়। সপ্তপর্ণী লেখা তিন যুগে তিন অবতারের সদ্ধর্মপালনের প্রতিজ্ঞাকে এক করে দেখাবার জন্য। রাম, কৃষ্ণ আর গৌতম বুদ্ধ'কে একত্র করে ইতিপূর্বে কোনো গল্প উপন্যাস লেখা হয়েছে কি না জানা নেই। সপ্তপর্ণীর রামচন্দ্রেরও রামায়ণের রাম হবার প্রয়োজন নেই, সপ্তপর্ণীর প্রেমিক কৃষ্ণকেও মহাভারত বা ভাগবতের কৃষ্ণের সঙ্গে তুলনায় টানার মাথার দিব্যি নেই। সপ্তপর্ণীর গৌতমও বৌদ্ধ ধর্মের প্রচেতাপুরুষ নন। তাঁরা সবাই অন্য। তাঁরা একে অপরের থেকে অবিচ্ছিন্ন। এই গল্পে রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ সকলে ব্যর্থ মানুষের মতো কেঁদেছেন, পরাজিত হয়েছেন তবু প্রেমের মন্ত্র ত্যাগ করেননি।
গোটা উপন্যাস নিরবিচ্ছিন্ন অধ্যাত্মের ছন্দে বইলেও মাঝে ঠিক স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রেমের চেয়ে বড় অধ্যাত্মবাদ নেই।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.