মগ্নপাষাণ
সূর্যনাথ ভট্টাচার্য
প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী
খ্রিস্টজন্মের দুশো সত্তর বছর আগে মগধের সিংহাসনে অভিষিক্ত হয়েছিলেন বিন্দুসার-পুত্র অশোক। ধর্মরাজ্য স্থাপনের সংকল্প নিয়ে মৌর্যসম্রাট প্রিয়দর্শনের সম্রাট অশোক প্রিয়দর্শী হয়ে ওঠার সে অনুপম গাথা ভাস্বর করেছে ইতিহাসের পাতা। কিন্তু সে পৃথক প্রসঙ্গ।
অশোক বিন্দুসারের কোনো অখ্যাত রানির পুত্র। মাতৃকুলে ছিল না রাজরক্তের কৌলীন্য। কোনোমতেই তিনি হতে পারেন না পিতার রাজ্যের নৈসর্গিক দাবিদার। সম্রাট বিন্দুসার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী চয়ন করেও যাননি। সেক্ষেত্রে সর্বার্থেই তাঁর অগ্রমহিষীর পুত্র সুসীমের সিংহাসনে বসবার কথা।
অথচ চার বছর পরে অভিষেক হয়েছে অশোকের। কিন্তু কীভাবে জ্যেষ্ঠভ্রাতা সুসীমকে অতিক্রম করে কনিষ্ঠকুমার সিংহাসনে আসীন হলেন, তা আজ বিস্মৃতির অন্ধকারে। ইতিহাস ঐ চতুর্বর্ষব্যাপী অশান্ত ঘটনাপঞ্জীর কোনো বিশ্বস্ত বয়ান সঞ্চয় করে রাখেনি। হিরণ্ময় নৈঃশব্দে মূক হয়ে আছে মহাকালখণ্ডটি। দুইপ্রান্তের আলোকিত সূত্রগুলির ঐতিহাসিক গ্রন্থিটি অদৃশ্য এক অপার্থিব অন্ধকারে।
ঐতিহাসিকদের একটা সহজবোধ্য অনুমান হল ভ্রাতৃবিরোধ। সিংহাসন দখলের লড়াই চলেছিল চার বছর। ভাই-এ ভাই-এ হানাহানি।
বৌদ্ধ গ্রন্থে আছে কুলকলঙ্কের কিছু রক্তাক্ত ইঙ্গিত। পুরাণ-গ্রন্থাদিতেও সম্রাট আত্মীয় হননকারী রূপে উক্ত। সেখানে বলা আছে, বহু ভ্রাতার রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল তাঁর হাত। রাজ্যলাভের নিমিত্ত অশোক মেতে উঠেছিলেন অনধিকার ক্ষমতার প্রয়োগে। হিংসার আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। বয়েছিল অগণিত শোণিত-ধারা।
জড় পাথরের মাঝে উন্মোচিত হয় সুদূর অতীতের আলোকিত ইতিহাস। কোনো এক প্রিয়দর্শী রাজার হৃদয়মোক্ষণ করা আত্মোপলব্ধ জীবনদর্শন! এক দিগ্বিজয়ী সম্রাট-কথিত অনাহত শান্তির বাণী।
বহু ভ্রাতৃরক্তে হাত রঞ্জিত করে সিংহাসনে আরোহণ এবং কলিঙ্গ যুদ্ধের গণহত্যার শোকে অস্ত্র ত্যাগ।-- প্রচলিত ইতিহাস-ভাষ্যের এই দুই বৈপরীত্য মিলবে কীভাবে?
রহস্যাবৃত ঐ চতুর্বর্ষতেই উত্তর রয়েছে সব প্রশ্নের। মিলবে ঐতিহাসিক আখ্যান, 'মগ্নপাষাণ' - এ।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.