মহাভারতের নারী
শুভেন্দ্রনাথ বন্ধ্যোপাধ্যায়
কিছুদিন পর। পাঞ্চালরাজনন্দিনী কৃষ্ণার স্বয়ংবর-সভার সংবাদ শুনতে পেয়ে পাণ্ডবেরা চললেন পাঞ্চালপুরীতে। স্বয়ংবর সভায় লক্ষ্যভেদ করে অর্জুন কৃষ্ণার বরমাল্য লাভ করলেন।
কুন্তী জানতেন, ছেলেরা ভিক্ষা করতে বেরিয়েছে। ভীম ও অর্জুন যথাসময়ে ফিরে না আসায় কুন্তী অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন। বর্ষণমুখর রাত। দরজার কাছে উপস্থিত হয়ে ভীম ও অর্জুন কুন্তীকে ডেকে বললেন, “মা, ভিক্ষা এনেছি।'
দরজা না খুলেই ঘরের ভেতর থেকে বললেন কুন্তী, ‘সকলে মিলে ভোগ করো।'
দরজা খুলেই কুন্তী দেখলেন নববধূকে। দুশ্চিন্তার ছায়া খেলে গেল তাঁর মুখে। সস্নেহে বধূর হাত ধরে তাঁকে নিয়ে গেলেন ঘরের ভেতরে। যুধিষ্ঠিরকে বললেন, ‘বৎস, আমি বধূকে না দেখেই ঘরের ভেতর থেকে বলে ফেলেছি— সকলে মিলে ভোগ করো। তুমি ধর্মজ্ঞ, আমার বাক্য যাতে মিথ্যা না হয়, এই রাজকুমারীও যাতে ধর্মভ্রষ্টা না হন, সে-রকম উপায় বার করো।'
যুধিষ্ঠির বললেন, “জননী, তুমি না-জেনে যা বলেছ, তা না মানলে দোষের কিছু হবে না। অর্জুনই কৃষ্ণার পাণিগ্রহণ করুক।'
অর্জুন তাতে রাজি হলেন না। মায়ের আদেশ কেমন করে লঙ্ঘন করবেন তিনি? একে একে পাঁচ ভাই দ্রৌপদীর পাণিগ্রহণ করলেন।
এ-খবর জেনে ধৃতরাষ্ট্র কুন্তী-দ্রৌপদীসহ পাণ্ডবদের হস্তিনাপুরে ফিরিয়ে আনলেন। অর্ধেক রাজ্য দিয়ে তাঁদের পাঠালেন ইন্দ্রপ্রস্থে। সেখানে সুখেই দিন কেটেছে পাণ্ডবদের।
মহাকাব্যিক সুষমায় 'মহাভারতে'র বিশাল ব্যাপ্তি। এর অন্তালোকের কালজয়ী ঐশ্বর্য আমাদের মুগ্ধ করে, বিস্মিত করে। প্রতিটি চরিত্রে খুব সহজে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন মহাকবি – ব্যাসদেব। নারী-চরিত্রও তার ব্যতিক্রম নয়।
....' 'মহাভারতে'র মূল কাহিনির পাশাপাশি আছে অনেক উপ-কাহিনি। সেখানেও বিচিত্র নারী চরিত্রের মুখামুখি হই আমরা। নারীমনের চিরন্তন সুখ-দুঃখ আশা- আকাঙ্ক্ষার যেন মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন এঁরা। মূল কাহিনির নারী চরিত্রের সঙ্গে এঁদের কথাও চিত্রিত হল এই গ্রন্থে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.