পদিপিসির বর্মিবাক্স

(0 পর্যালোচনা)
লিখেছেন/সম্পাদনা করেছেন
লীলা মজুমদার
প্রকাশক লালমাটি

মূল্য
₹300.00
ক্লাব পয়েন্ট: 25
সংস্করণ
পরিমাণ
মোট দাম
শেয়ার করুন

পদিপিসির বর্মিবাক্স 

লীলা মজুমদার 

প্রচ্ছদ - সত্যজিৎ রায় 

অলংকরন - অহিভুষণ মালিক 

---------------

আমি আর সেই চিমড়ে ভদ্রলোক বললাম, “তারপর ? তারপর ?” পাঁচুমামা বলল, “তারপর আর কি হবে ? একসপ্তাহ সব ওলটপালট হয়ে রইল, খাওয়া নেই, শোয়া নেই, কারু মুখে কথাটি নেই। সারা বাড়ি সবাই মিলে তোলপাড় করে ফেলল। কত যে রাশি রাশি ধুলো, মাকড়সার জাল, ভাঙা শিশি বোতল, তামাকের কৌটো বেরুল তার ঠিক নেই। কত পুরোনো হলদে হয়ে যাওয়া চিঠি বেরুল ; কত গোপন কথা জানাজানি হয়ে গেল ; কত হারানো জিনিস খুঁজে পাওয়া গেল। কিন্তু পদিপিসীর বর্মি- বাক্স হাওয়ায় উড়ে গেল। এমন ভাবে হাওয়া হয়ে গেল যে শেষ অবধি অনেকে এ কথাও বলতে ছাড়ল না যে বাক্সটাক্স সব পদিপিসীর কল্পনাতে ছাড়া আর কোথাও ছিল না। কেবল মাত্র রমাকান্ত বার বার বলতে লাগল— নিমাই খুড়োর বাড়ি থেকে পদিপিসী যে খালি হাতে ফেরেননি একথা ঠিক। গরুর গাড়িতে আসবার সময়ে বাক্সটা চোখে না দেখলেও পদি পিসীর আঁচল চাপা শক্ত চৌকো জিনিসের খোঁচা পেটে লাগছিল, এবং সেটা পানের বাটা নয় এও নিশ্চিত, কারণ পানের বাটার খোঁচা তার পিঠে লাগছিল।

“বাক্সের শোকে পদিপিসী আধখানা হয়ে গেলেন। অত হীরে- মতি লোকে সারাজীবনে কল্পনার চোখেও দেখে না আর সে কিনা অমন করে কোলছাড়া হয়ে গেল! শোকটা একটু সামলে নিয়ে পদি পিসী আবার রমাকান্তকে নিয়ে নিমাইখুড়োর খোঁজে গেছিলেন যদি কিছু পাওয়া যায়। গিয়ে দেখেন বত্রিশ বিঘার শালবনের মাঝখানে নিমাইগুড়োর আড্ডা ভেঙে গেছে, জনমানুষের সাড়া নেই, বুনো বেড়াল আর হুতুম প্যাঁচার আস্তানা ।

“তারপর কতবছর কেটে গেল। বাক্সের কথা কেউ ভুলে গেল, কেউ আবছায়া মনে রাখল। একমাত্র পদিপিসীই মাঝে-মাঝে বাক্সের কথা তুলতেন। আরও বহু বছর বাদে পদিপিসী স্বর্গে গেলেন। যাবার আগে হঠাৎ ফিক করে হেসে বললেন, 'এই রে! বাক্সটা কী করেছিলাম এদ্দিন পরে মনে পড়েছে!' বলেই চোখ বুজলেন। তাই শুনে পদিপিসীর শ্রাদ্ধের পর আর এক চোট খোঁজাখুঁজি হয়েছিল কিন্তু কোনো ফল হয়নি।”

চিমড়ে ভদ্রলোক বললেন, “তারপর?”

পাঁচুমামা বলল, “সেই বাক্স আমি বের করব। কিন্তু আপনার তাতে কী মশাই?”

পাঁচুমামা এইখানে চিমড়ে ভদ্রলোকের দিকে একদৃষ্টে কটমট করে চেয়ে থাকার ফলে চিমড়ে ভদ্রলোক উঠে সুড়সুড় করে নিজের জায়গায় বসে নিবিষ্ট মনে দাঁত খুঁটতে লাগলেন। ইতিমধ্যে বেশ রাত হয়ে যাওয়াতে তাঁর স্ত্রী-পুত্র পরিবার সবাই ঘুমিয়ে টুমিয়ে পড়ে একেবারে একাকার হয়ে রয়েছে দেখা গেল ।

লীলা মজুমদারের অনবদ্য অমর সৃষ্টি ‘পদিপিসির বর্মিবাক্স'। সুদৃশ্য উপহার বাক্সের সাথে পাওয়া যাচ্ছে ।

পর্যালোচনা ও রেটিং

0 মোট 5.0 -এ
(0 পর্যালোচনা)
এই বইয়ের জন্য এখনও কোন পর্যালোচনা নেই

সংশ্লিষ্ট বই

বই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা (0)

প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য

অন্যান্য প্রশ্নাবলী

কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি