রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতনের টুকরো গল্প
অমল পাল
মুক্ত মন ছাড়া শিক্ষা গ্রহণ অসম্ভব, তিনি নিজে মুক্ত মনের মানের অধিকারী ছিলেন বলেই হয়তো বিশ্ব প্রকৃতির সাথে নিজেকে একাত্ম করতে পেরেছিলেন, আর পেরেছিলেন বলেই রবীন্দ্রনাথ মর্মে মর্মে অনুভব করেছিলেন, এবং চার দেওয়ালের ঘেরাটোপে আবদ্ধ না থেকে আনন্দ এবং চিরসবুজ প্রকৃতির মাঝে শিক্ষাকে আত্তীকরণ করতে তিনি স্থাপন করেন মনের আরাম এবং প্রাণের আরাম শান্তিনিকেতন।
'চা-হারামো' গল্পের উদ্ধৃতাংশ-
শান্তিনিকেতনের শিক্ষাভবনের অধ্যক্ষ অনিলকুমার চন্দ্র ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে গুরুদেবের কাছে নালিশ জানিয়ে বললেন, 'গুরুদেব, ওদের একটু বলে দিন, কলেজের পড়াশুনা সর্ম্পকে ওরা বড়ো উদাসীন।'
গুরুদেবের উত্তর, 'ওরা নিজেরাই যদি পড়াশুনা করবে, তবে তোমরা আছ কী জন্য? রোগী যদি নিজেই রোগ ধরতে পারবে, তবে ডাক্তারের কী দরকার?'
কথাটি শেষ করে এবার তিনি ছেলেমেয়েদের দিকে তাকিয়ে রহস্যের ভঙ্গিতে বললেন,' "আমাদের প্রিন্সিপাল" নামে একটা প্রবন্ধ লিখে খুব একচোট গালাগালি দিস।'
অধ্যক্ষ মহাশয়ও কম যান না, তিনি বললেন, 'গুরুদেব, চা-তে তো আর নুন নেই, চা খেয়ে গালাগাল দিতে বাধবে না ওদের।'
গুরুদেব হাসতে হাসতে বললেন, 'না, তোর সে ভয় করবার কারণ নেই। আজকালকার ছেলেরা চা-হারামো করবে না।'
রবীন্দ্রনাথ হলেন মহাসাগর সম, কতটুকু আমরা জানি? জানাটা ভীষণ প্রয়োজন বলে মনে করি। যে যেই সম্পর্কের মানুষ তার সাথে সেইভাবেই কথা বলতেন। সম্পর্কে নাতবৌ হলেও, বেশ শাসনের ভঙ্গিতে নাতি দিনেন্দ্রনাথকে বললেন, 'দিনু, দ্যাখ আমি আমার নাতবৌকে যদি গোপনে কিছু বলে থাকি আর সেটা যদি ছাপা হয়ে বেরোয় তো তুই কী বলবি?' রবীন্দ্রনাথের কথা শুনে সবাই তো হাঁ। রবীন্দ্রনাথ তখন দুষ্টু ছেলের মতো মুচকি হেসে সবার সামনে মেলে ধরলেন একটি কবিতার বই, যেই বইটির নাম 'কমলের প্রতি রবির উক্তি'।
এইরকম আরও অনেক টুকরো গল্প জানতে বিনম্র অমল পাল মাষ্টারমশাই এর 'রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতনের টুকরো গল্প' বইটি অবশ্যই পাঠ করা দরকার।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি