সাঁঝবেলার কাব্য
কাকলী পুরকাইত
আছে তোর বন্ধুকে কিছু বলব না। তুই একবার বল তোর বন্ধু কোথায় থাকে? শ্বেতা মায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে ডান হাতটা দেয়ালে বাড়িয়ে বলল, ওই তো আমার বন্ধু টিয়া।
তারা তিনজনে চারিদিকে তাকিয়ে দেখতে থাকে।
সুচন্দ্র বলল, কে মামণি, আমরা তো তাকে দেখতে পাচ্ছি না?
- হ্যাঁ, তোমরা সবাই দেখতে পাচ্ছ।
এবার সে মায়ের কোল থেকে উঠে দেয়ালে আঁকা সেই দোলনা চড়া মেয়েটিকে হাত দিয়ে দেখায় আর বলে ওই আমার বন্ধু।
সুচন্দ্র এবার একটু স্বাভাবিক হয়ে মুখে হাসির ভাঁজ এনে বলল, ও। এই তাহলে তোর বন্ধু। তুই তাহলে এই বন্ধুর সঙ্গে খেলা করিস?
- হ্যাঁ, ও আমার দোলনা চড়ায়। তুমি যে পুতুলগুলো কিনে দিয়েছ ওগুলো টিয়ার খুব পছন্দ। এর আগেও শ্বেতা ওই একই কথা বলেছে। মেয়ের এরকম অস্বাভাবিক কথাবার্তা তমালীর একেবারে ভালো লাগে না। সেই থেকে তমালী দু-চোখের পাতা এক করতে পারে না। যেন কোনো অজানা আতঙ্কে সে আতঙ্কিত।
সুচন্দ্র একেবারে নিশ্চিত এটা কোনো ভূতটুতের ব্যাপার নয়। এটা একটা মেন্টাল ডিজঅর্ডার। তাই সে ঠিক করল সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে শ্বেতাকে নিয়ে যাবে। তমালী বলে, না না, আমার মন কু গাইছে। গৃহপ্রবেশের দিন এই ঘরে আগুন লেগেছিল তখন থেকে আমার মনটা অস্থির। তার উপর মামণি এই অস্বাভাবিক আচরণ।
সুচন্দ্র তমালীকে বোঝাতে থাকে। আসলে মামণি গ্রামের বাড়িতে তার বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাত। কিন্তু এখানে শ্বেতা পুরোপুরি একা। ওর মধ্যে মানসিক ট্রেস পড়েছে বোধহয়।
তমালী আবার বিরক্তি স্বরে বলল, আমার মন কিন্তু অন্য কথা বলছে। শ্বেতা বারংবার দেয়ালে আঁকা ছবিটাকে দেখাচ্ছে। আমার মনে হয় কিছু একটা ব্যাপার আছে।...
কাকলী পুরকাইতের প্রিয় ও অন্যতম শ্রেষ্ঠ গল্পগুলির এই সংকলনে ধরা থাকল বর্তমান সময় ও প্রবহমান জীবন। বাস্তব জীবনের সঙ্গে কল্পনা মিশ্রিত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের ঘটনা কাহিনি বর্ণিত হল। ভৌতিক, করোনাকালের পরিস্থিতি, রহস্য, মনস্তত্ত্ব ও ভ্রমণের গন্ধ নেওয়া যেতেই পারে এই গল্প সংকলন থেকে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.