ছবির নাম পাঠভবন
রিম্পি
মানুষকে সম্ভবত সবচাইতে বেশি টানে তার ফেলে আসা দিনগুলো। তখন চলার পথে খেলাচ্ছলে যেসব নুড়ি-পাথর সে কুড়িয়েছিল, আজকের রোদে সেসবই হয়ে ওঠে অলীক চকমকি, যাদের গায়ে গা লেগে স্মৃতির ফুলকি বাতাসে জোনাকির মতো উড়ে বেড়ায়। রিম্পি’র এই সংকলন সেইসব জোনাকিদের জাদুঘর, এ-কথা বললে ভুল হবে না। বাঙালির গত কয়েক দশকের জীবনে, চর্চায়, আবহে শান্তিনিকেতন ঘুরে ফিরে এসেছে নানাভাবে। সমষ্টিযাপন থেকে ব্যক্তির অলিন্দে তার আলো এসে পড়েছে নানান নকশার জাফরি নিয়ে। রিম্পি তাঁর নিপুণ লেখার আল্পনায় নিজের বেড়ে ওঠার সময়কে, তাঁর পাঠভবনের দিনকালকে এঁকে নিয়েছেন ছবিরই মতো, তাই এ-বই সার্থকনামা বৈকি। বয়সে তিনি আনকোরা হলেও, তাঁর মধ্যে এক পরিণত অতীতচারী সত্তা আছে, আছে নিজস্ব এক লিখনভঙ্গিমা, যা পাঠককে আত্মীয়তার উঠোনে নিয়ে আসতে দেরি করে না। তাঁরাও পায়ে পায়ে বেড়িয়ে দেখতে পারেন, রিম্পি’র ছবির মতো পাঠভবন। ‘চারুর সহজপাঠ’-এ যে-নিবিড়তার স্পর্শ ছিল, এই বইতেও সেই আগল দিতে ভোলেননি রিম্পি। তাঁর সহজ, সাবলীল, স্পষ্ট গদ্যভাষায় কী সুচারু ভাবে ফুটে উঠেছে সাধারণ রোজনামচার অসাধারনত্ব, কুয়াশার মধ্যে যেমন ফুটে থাকে সেতুর কিনার। আর এইখানেই ব্যক্তিজীবনের সঞ্চয় হয়ে ওঠে সকলের সম্পদ। লেখকের পাশাপাশি মানুষটিরও অবয়ব ফুটে ওঠে এই আয়নাজলে, যে-জলে ভাসছে পাঠভবনের টুকরো টুকরো ছবি। বাংলা ভাষার একজন পাঠক হিসেবে রিম্পিকে অভিবাদন জানাই, এমন একটি গ্রন্থ আমাদের লিখে উপহার দেবার জন্য। তাঁর আগামী লেখার অপেক্ষা শুরু হলো আজ থেকেই।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি