ক্রান্তদর্শী শিবরাম
- প্রত্যুষ পাল ও ধীমান দাশগুপ্ত
বাংলা সাহিত্যে বড় লেখকের অভাব নেই। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা যুগে যুগে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছেন এবং হবেন। কিন্তু কেবলমাত্র কয়েকজনই আছেন যাঁরা সময়ের থেকে কয়েক দশক, এমনকি অর্ধশতক অবধি, এগিয়ে লিখেছেন। এঁরা ক্রান্তদর্শী লেখক, এবং এঁদের প্রথম জন অবশ্যই শিবরাম চক্রবর্তী। শিবরামের বিশেষত্ব হল অ্যানলগ যুগেই তিনি ডিজিটালের ভাবীলক্ষণগুলিকে এক অলীকভৌত রূপ প্রদান করেছেন, যা ভাববাদের লেশমাত্র স্পর্শ না করে বিজ্ঞানের আপত পরিসর অতিক্রম করে এক হাস্যকল্প জগৎ নির্মাণ করেছে। এজন্য তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী ও পারিভাষিক শব্দাবলী দুইই এমন অভিঘাতীভাবে আলাদা। তিনি সর্ব অর্থেই স্বরাজ্যে সম্রাট। এই সম্রাটকে তিন সালাম জানাতে বাঙালি পাঠকের বড় দেরি হয়ে গেছে। তাঁর অনেকটাই এখনও রয়েছে অনাবিষ্কৃত। শিবরামীয় হিমশৈলের নিমজ্জিত অংশটির কয়েকস্তর দর্শন, স্পর্শন ও বিশ্লেষণ করার প্রয়াস রয়েছে এই গ্রন্থে।
প্রত্যুষ পাল কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি। গবেষণার বিষয়: 'উদয়ন ঘোষ: জীবন ও সাহিত্য'। বর্তমানে তিনি সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অতিথি শিক্ষক। ‘মহাভারতের ন্যারেটিভ: সাহিত্যে, নাটকে, সিনেমায়’ তাঁর প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ। তাঁর অন্যান্য গ্রন্থ 'প্রস্তুতি পর্বের বাংলা ছোটোগল্প' (সম্পাদনা) ও ‘উপনিষদ ও উপন্যাস' (যন্ত্রস্থ)।
বাংলা সাহিত্য ও বিশ্ব চলচ্চিত্রের দর্শনকে বর্তমান সময়ে যাঁরা চিন্তার গভীরতা ও ব্যাপ্তিতে সমৃদ্ধ করে চলেছেন, তাঁদের অন্যতম ধীমান দাশগুপ্ত। বাজার যখন জীবনবোধকে বহু দিক থেকে গ্রাস করছে, সৃজনশীলতাকে পরিণত করছে বন্ধকি পণ্যে, তখন তাঁর শ্রেণি অবস্থানে অনড় থেকে ধীমান নিরলস ভাবে ব্যস্ত রয়েছেন তাঁর স্বকীয়তা প্রকাশে। সেই কৃতিত্বের স্বীকৃতিতে পেয়েছেন বনফুল শতবার্ষিকী পুরস্কার, অন্নদাশঙ্কর শতবার্ষিকী পুরস্কার এবং গজেন্দ্রকুমার মিত্র স্মারক পুরস্কার। ইতিমধ্যে তাঁর লেখা শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত চলচ্চিত্রায়িত চিত্রনাট্যের সংখ্যা প্রায় ষাট। তাঁর বিপুল কাজের থেকে চয়ন করে আটটি কাজ প্রকাশিত হয়েছে 'বাঙালির চিন্তামূলক রচনাসংগ্রহ' শীর্ষক গ্রন্থমালায়। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জীবনচরিতমালায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে দু'বছর আগে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি