নাটক সমগ্ৰ ৩
ব্রাত্য বসু
বিনির্মাণ। নাটক বিনির্মিত হয় সময় আর জীবনের পারস্পরিক প্রতিবিম্বে। জীবন কি কখনও নাটকের পাশে দাঁড়িয়ে খোঁজে তার আত্মিক বোধিসত্ত্ব? নিজেকে চিনতে পারার অমৃত ও হলাহলে মাখানো সেই অনুভব। সেখানে প্রেম আছে, প্রতিহিংসা আছে, অনুরাগ-এর পাশে রিরংসা আছে, সামাজিক মূল্যবোধের আঙিনায় রাজনীতির অনুপ্রবেশ আছে। আর এইসব খণ্ডচিত্র সাম্প্রতিককালে যাঁর নাটকে সব থেকে বেশি অর্থবহ হয়ে নাটক ও জীবনকে দুটো কক্ষপথে আবর্তিত না করে একই ঘরের দুটো জানলার মতো সমান আলো ও বাতাস দিয়েছে-তাঁর নাম ব্রাত্য বসু। কোনও সংজ্ঞা নির্দেশ নয়, কোনও তত্ত্বের তর্কজালে না জড়িয়েই জীবনের সমস্ত আনাচ-কানাচ দাপিয়ে বেড়ায় ব্রাত্যর প্রতিটি নাটকের প্রতিটি সংলাপ। আমি, তুমি, আপনি, তুই হয়ে ঘুরে বেড়ায় আমাদের সমস্ত সত্তার চলচ্ছাব তাঁর নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে। জীবনের মুখোমুখি জীবন দাঁড়িয়ে একে অপরকে প্রশ্ন করে যায় জন্ম থেকে মৃত্যুর সীমানা পর্যন্ত। সাহিত্যের কোনও ঘেরাটোপ বা তত্ত্বের কোনও বেড়াজাল আটকে রাখতে পারে না ব্রাত্যর প্রতিটি নাটকের সীমাহীন বৈচিত্র্যের আকাশ।
অগুনতি রংয়ের রামধনু। দুটি খণ্ড আগে বেরিয়েছে। গত বছর পাঁচেকের সময়কালের মঞ্চসফল বারোটি নাটক নিয়ে এবার নাটকসমগ্র ৩য় খণ্ড। জীবনের আপাত জতুগৃহে মানুষরূপী জীবজন্তু আপাতত হয়তো দুটো দিনের দেখাসাক্ষাতে পেয়ে যায় কোনও এক সুপারি কিলারের হদিশ অথবা আনন্দীবাঈয়ের প্রেম। সিনেমার মতো জীবনের পাতায় হেঁটেচলে বেড়ায় আলতাফ্ গোমস্, ইলা-গুঢ়ৈষার অনুভূতি ছাপিয়ে কেউ যেন বাজিয়ে দেয় জীবনেরই ফোর্থ বেল আর কে যেন মূঢ়তার বারুদ সঞ্চয় করতে করতে ছুড়ে দেয় এক বিধ্বংসী বোমা। নাট্যকারের সন্ধানে এইসব চরিত্রেরা হেঁটে চলে ফিরে বেড়ায় ব্রাত্য-র নাটকের এক অঙ্ক থেকে আরেক অঙ্কে যেখানে নাট্যকারকে চ্যালেঞ্জ করে খোদ নাটক-ই। বিনির্মাণ।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি