স্বর্ণকুমারীর মৃত্যু ও জীবন
জয়া মিত্র
১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে টেলিগ্রাফ কাগজে ব্যাঙ্গালোর থেকে সাংবাদিক জানকী নায়ারের করা একটি ছোটো রিপোর্ট ছিল। উত্তর কর্ণাটকের দলিত জাতির একটি মেয়ে কিছুতেই দেবদাসী জীবন মেনে নিতে চায়নি, গণধর্ষণে খুন হয় সে। খবরে তার নাম উল্লিখিত ছিল স্বর্ণাভা বলে। একুশ বছর বয়স ছিল মেয়েটির। জীবন ভালো করে শুরুও হয়নি তার। সম্পূর্ণ অচেনা এক জগৎ থেকে এসেছিল সোনাবরণ সে মেয়েটি। ওড়িশা কিংবা তামিলনাড়ুর দেবদাসীদের যে অস্পষ্ট কুহক ছবি দিয়ে আমাদের মনে দেবদাসী ধারণাটি তৈরি হয়, যাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অবলম্বনে বেঁচে ছিল ভারতবর্ষের অন্তত দুটি ধ্রুপদী নাচ—ওড়িশি আর ভরতনাট্যম, যে দেবদাসীদের লীলামূর্তি মন্দিরের আপাদমস্তক ভাস্কর্যে হিল্লোল তোলে, তা থেকে একেবারে ভিন্ন এক বাস্তবতায় বাস করে এই দেশেরই দশটি হতদরিদ্র জেলার অন্তত বারো হাজার অচ্ছুৎ কন্যা। উত্তর কর্ণাটকের দেবদাসীদের রক্ষয়িত্রী দেবী ইয়েলাম্মা। উত্তর কর্ণাটকের দশটি জেলা ছাড়িয়েও বিস্তৃত এই ইয়েলাম্মা-সংস্কৃতি এক ভিন্ন, জটিল ও অপ্রকাশ্য জীবনচর্যা হয়ে বিদ্যমান ছিল নব্বইয়ের দশকেও। সুস্থভাবে, স্বাধিকারে বাঁচতে চাওয়া একটি প্রায় কিশোরী মেয়ের বীভৎস মৃত্যু সেই লাঞ্ছনাময় জীবনের ঢাকা ধরে টান দিয়ে যায়। দলিত মেয়েটির অসহনীয় জীবন ও তার ভয়ংকর মৃত্যুকে যে ভাবে এক ঘোষণাপত্র করে তুলেছিল তার আপন মানুষেরা, সেই আখ্যান নিয়েই এই উপন্যাস ‘স্বর্ণকুমারীর মৃত্যু ও জীবন’।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.