বইয়ের নাম - রুধির সোপান
লেখক - শাশ্বত ঘোষ
“আমি সবই বুঝছি মাতা। কিন্তু… তবুও” – প্রবীণ ব্রাহ্মণের মুখ থেকে অমানিশার অন্ধকার কাটতে চায় না।
“বিপ্র!” – দুই হাত জোড় করে কাতর অনুনয়ের সুরে বলে ওঠেন সেই পুরুষবেশী নারী – “যেকোনো শুভকাজের জন্য যদি আত্মবলিদান দিতে হয় আমি প্রস্তুত। আর সেই কাজের জন্য যদি ঝুঁকি নিতে হয়, তা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি” – নিজের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে পদচারণা করতে থাকেন তিনি – “একবার ভেবে দেখুন আপনারা। এই চন্দ্রালুক্য নদী প্রাকৃতপুর, বাদগাম, পানপার – এবং আরও কতই না গ্রামের জীবন ধারণের এক এবং একমাত্র অবলম্বন। গ্রামবাসীদের কৃষি এবং প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা এই চন্দ্রালুক্যের উপর নির্ভরশীল। সেই মাতৃসমা প্রবাহ থেকে বঞ্চিত হলে তাদের সামনে যে পথ খোলা থাকবে তা হল তৃষ্ণায় মৃত্যু অথবা আত্মহত্যা বা এই স্থান ত্যাগ করা। বহুযুগ ধরে এই অঞ্চলের অধিবাসী সেই সব মানুষদের সাথে এটা কি হওয়া উচিত?”
কক্ষের নিঃস্তব্ধতা জানান দেয় যে এই কার্যের মহৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে কারুর কিছুই দ্বিধা নেই, কিন্তু সাধ এবং সাধ্যের, ইচ্ছা এবং উপায়ের মধ্যেকার অলঙ্ঘনীয় ব্যবধানের বিষয়েও প্রত্যেকেই অবগত।
“আমি জানি বিপ্র যে শুধু বিপদের আশঙ্কা নয়, আপনার মত ধর্মভীরু মানুষের মনে অন্য কোন কারণে দ্বিধা সৃষ্টি হয়েছে।” – রাজবংশীয় নারীর কন্ঠ এখন যেন অন্তর্ভেদী –
“মিথ্যাচার! দেবতার নামে মিথ্যা বচন, তাও রাজার সামনে। হয়ত সেই চিন্তাই আপনাকে সম্মতি দিতে বাধা দিচ্ছে। তবে সেদিক থেকেও আপনাকে আমি আশ্বস্ত করছি। আপনাকে কোনো মিথ্যার আশ্রয় নিতে হবে না। যা করার সব প্রযুক্তির হাত ধরেই হবে। আপনি শুধু ঘটনাস্থলে সব জেনেও মৌন থাকবেন। শুধু এটুকু সাহায্য প্রার্থনা করি আপনার কাছে।”
কী পরিণতি হবে এই মিথ্যাচারের? ধর্ম না মানবপ্রেম – জয় হবে কার?
উত্তর আছে জনপ্রিয় লেখক শাশ্বত ঘোষের লেখনীতে “রুধির সোপান” বইটিতে। এতে আছে ভারতবর্ষের অখ্যাত অথবা বিস্মৃত অতীতভিত্তিক ছ’টি রুদ্ধশ্বাস ঐতিহাসিক উপন্যাস।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি