অনন্য বিদ্যাসাগর
সন্তোষকুমার কুণ্ডু
বিদ্যাসাগরের প্রথম জীবনীকার তাঁর তৃতীয় ভ্রাতা শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনকালেই লেখা শুরু করেছিলেন। তাঁর কথায়, তিনি জ্যেষ্ঠাগ্রজকে পড়ে শুনিয়েও ছিলেন।
বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং তাঁর বাল্যজীবন এবং কলকাতায় প্রথম বাসের কাহিনি মিলেছে বিদ্যাসাগর রচিত 'আত্মচরিত' থেকে। রবীন্দ্রনাথ থেকে সব জীবনীকাররা নিজ নিজ গ্রন্থে সেই তথ্যই নিয়েছেন নিজের নিজের মতো করে। ঘটনা একই, শিল্পীদের তুলির টানে নতুন নতুন ভাবে রূপায়িত হয়েছে।
"একদিন বিদ্যাসাগর চলেছেন আমহার্স্ট স্ট্রিট সংলগ্ন সরু গলি দিয়ে কলেজ জোয়ারের দিকে। গলির প্রায় শেষ মুখে, একটি বাড়ি থেকে হঠাৎ নারীকন্ঠের বিলাপ তাঁর কানে এল। বিদ্যাসাগর দাঁড়িয়ে পড়লেন। উৎকর্ণ হয়ে তিনি শুনলেন, ক্রন্দনরত ছেলেদের খাবার কিনে দেবার মতো একটি পয়সাও হাতে নেই বলে মা নিজের ভাগ্যকে ধিক্কার দিচ্ছেন। দয়ার সাগর আর স্থির থাকতে পারলেন না। তিনি গিয়ে ঘরের দরজার কড়া নাড়লেন। দরিদ্র গৃহস্থ, মহিলার স্বামী পয়সার খোঁজে বাইরে গিয়েছিলেন। তিনি ফিরে এসেছেন ভেবে মহিলা তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিলেন। কিন্তু অপরিচিত লোক দেখে বিব্রত বোধ করলেন। তাঁকে কোনো কথা বলার অবকাশ না দিয়ে বিদ্যাসাগর একটি দশ টাকার নোট তাঁর হাতে দিয়ে বললেন, 'এই সামান্য কিছু দিয়ে গেলাম মা, এখনই ছেলেদের জন্য কিছু খাবার এনে দাও।' কুলবধূ অবাক। বিদ্যাসাগর বললেন, আমার নাম বিদ্যাসাগর, তোমার আর এক ছেলে। আবার যদি কখনো এরকম কষ্ট পাও, আমাকে জানিও। এই আমার ঠিকানা।' কথা শেষ করেই তিনি চলে গেলেন। বিদ্যাসাগরের দানের এই ছিল রীতি।"
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.