বইয়ের নাম- বঙ্গযুদ্ধ
লেখকের নাম- বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
‘বঙ্গযুদ্ধ’ যুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসিকা হলেও, এখানে যুদ্ধের সাথে এসে জুড়েছে আরও অনেক কিছু। সায়েন্স ফ্যান্টাসির মোড়কে আমি এক বিকল্প পৃথিবীকে সামনে এনেছি। সেই পৃথিবীতে মানুষ ও ডাইনোসর নিয়ে এক আশ্চর্য বাস্তুতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই বাস্তুতন্ত্রের সাথে যোগ করেছি উগ্রপন্থা, এনেছি একটি জাতির স্বাধীনতা যুদ্ধ। সত্যি বলছি, যখন লিখতে শুরু করি, এত কিছু আমার মাথায় ছিল না। কিন্তু উপন্যাসিকার ঘটনাবলী যত সামনে এগিয়েছে, আমি যেন ঘটনার স্রোতে হারিয়ে গেছি। উপন্যাসিকার চরিত্রগুলো সহ গোটা গল্পটাই আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। ফলে একটা সময়ের পরে উপন্যাসিকাটি একটা গতিশীলা নদীর মতো তার নিজস্ব খাতে প্রবাহিত হয়েছে এবং তার ঘটনাবলীর চোরাস্রোতের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে আমায় এমন কিছু লিখতে হয়েছে, যাতে আমি সত্যিই নিজের মনকে পুনরাবিষ্কার করেছি। যুগপৎ বিস্ময় ও তীব্র অস্বস্তি আমার মননকে গ্রাস করেছে।
ভাবছেন, অস্বস্তি কেন? কারণ যুদ্ধের এক একটা ঘটনার সাথে লেপ্টে থাকে রক্তের দাগ ও অপরিসীম নির্মমতা। যে হিরন্ময় গৌরবের সাথে যুদ্ধে একপক্ষ জয়লাভ করে তার পেছনে আসলে থাকে জাতির লজ্জা, কষ্ট, আত্মত্যাগ, ভয়, কান্না এবং রণক্ষেত্রের মৃত চুপকথা। তাই এই লেখার শেষে একটা বিরাট বড় অস্বস্তিকর কৃষ্ণগহ্বরের সামনে আমি দাঁড়িয়ে থাকি। কৃষ্ণগহ্বরটা ক্রমে বদলে যায় একটা প্রশ্নচিহ্নে। প্রশ্নচিহ্নের ভেতর প্রশ্নটি অক্টোপাসের মতো আমায় জড়িয়ে ধরে। আমি ভেবে চলি, এই বীভৎস ইতিহাস আমি কেন লিখলাম... কেন? নিজেকে প্রবোধ দিই এই বলে, এ তো ইতিহাস নয়, এ তো ফিকশান; অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি। যদিও আমি নিজেকে বোঝাই, এই উপন্যাসিকার নাম, ঘটনা, চরিত্র—সবই কাল্পনিক, কিন্তু কোথায় গিয়ে যেন বিকল্প ইতিহাস স্বয়ং ইতিহাসের সাথেই জুড়ে যায়। কোন অংশটা ইতিহাস, কোনটা নয়, সেটা পাঠক বিচার করবে। উপন্যাসিকাটি সাইন্স ফ্যান্টাসি, নাকি বিকল্প ইতিহাসের বই, নাকি প্রেম ও যুদ্ধের অ্যাকশান থ্রিলার, নাকি এক ভিন্ন স্বাদের অ্যাডভেঞ্চার—সেটাও ঠিক করার দায় আমি পাঠককেই দিলাম।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.