ফিরে এল গোয়েন্দাপীঠ
আটটি রুদ্ধশ্বাস তদন্তকথার আটকাহন
সুপ্রতিম সরকার
গোয়েন্দাপীঠ সিরিজ়ের প্রথম তিনটি খণ্ড এবং পরবর্তীতে নতুন চারটি গল্পসহ ‘গোয়েন্দাপীঠ সমগ্র’ প্রকাশমাত্রই পাঠকপ্রিয় হয়েছিল সর্বস্তরে। কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের নিয়ে বাস্তবের নানান রুদ্ধশ্বাস মামলার থ্রিলারধর্মী আখ্যান সহৃদয় স্বীকৃতি পেয়েছিল পাঠকের দরবারে। সেই সিরিজ়েরই এবার প্রত্যাবর্তন আটটি কাহিনি নিয়ে। তদন্তপদ্ধতির নিরিখে দিকচিহ্ন হিসেবে স্বীকৃত, এমন একাধিক মামলার নেপথ্যকাহিনি সমৃদ্ধ করেছে গোয়েন্দাপীঠ সিরিজ়ের এই নবতম নিবেদনকে। অভিজ্ঞ আইপিএস সুপ্রতিম সরকার তাঁর নির্মেদ এবং স্বাদু লেখনীতে আটটি ভিন্ন চরিত্রের মামলায় তুলে এনেছেন বাস্তবের ফেলু-ব্যোমকেশদের তদন্তপথের নানান চড়াই-উতরাই। ঘটনার কিনারা, তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ এবং চার্জশিট পেশ যদি ম্যারাথন দৌড়ের প্রথমার্ধ হয়, তার চেয়েও কঠিনতর হল দ্বিতীয়ার্ধ, যেখানে অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করাটাই হয়ে দাঁড়ায় তদন্তকারীর পাখির চোখ। এই দ্বিতীয়ার্ধের যাত্রাপথের বাধাবিপত্তি-টানাপড়েন নিখুঁত উঠে এসেছে লেখকের টানটান বর্ণনায়। মাত্র মাসচারেক আগে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরে এক নাবালিকার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। সংশ্লিষ্ট মামলায় মাত্র বাষট্টিদিনের মধ্যে অভিযুক্তের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল আদালত, যা পশ্চিমবঙ্গের তদন্ত-ইতিহাসে এক সর্বকালীন নজির। কোন পথে কীভাবে এগিয়েছিল তদন্ত, কীভাবে হয়েছিল এই অসাধ্যসাধন, শেষ কাহিনিতে সুপ্রতিম সবিস্তার লিপিবদ্ধ করেছেন তার প্রামাণ্য ধারাবিবরণী। যা এ-ধরনের মামলায় আদর্শ তদন্ত-মডেল হিসেবে নিশ্চিত অনুসৃত হবে আগামীতে। ‘Police procedural’ গোত্রভুক্ত এই বই বাংলার অপরাধ-সাহিত্যে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। সে রক্তমাংসের গোয়েন্দাদের কর্মকাণ্ডে উৎসাহী সাধারণ পাঠকই হোন বা পেশাজনিত তদন্তশিক্ষার্থী, সবার কাছেই অবশ্যপাঠ্য। গোয়েন্দাপীঠ। ফিরে এল।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি