ছোটোদের এক ডজন উপন্যাস
আশাপূর্ণা দেবী
আশাপূর্ণা দেবীর সমস্ত গল্পেরই সাধারণ একটা লক্ষণ হল মজা। হাসির গল্পই হোক বা ভূতের গল্প, মজাটা সেখানে থাকবেই- মজা এবং বিস্তর খাওয়া-দাওয়ার বর্ণনা। কত রকমের মজা যে এখানে আছে তার শেষ নেই, সিনেমায় পার্ট করতে গিয়ে মজাদার পরিণতি আছে ('অলৌকিকের মতো'), প্রেমেন্দ্র মিত্রর ঘনাদার মতো এক গুলদার মানুষের গল্প আছে ('নজর উঁচু'), বিয়েবাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে বিচ্ছিরি ফ্যাসাদের গল্প আছে ('দিব্যেন্দুসুন্দরের দিব্যজ্ঞান'), লটারির টিকিট যে পেলেও খারাপ, না পেলেও খারাপ সে গল্প আছে ('ভাগ্যলক্ষ্মী লটারি'), রথযাত্রা স্পেশ্যালে প্রভু জগন্নাথ দর্শনের গল্পও আছে ('সময়ই পাওয়া গেল না')। বড়োদের জন্যে লেখাতেও যে তিনি কেন এত জনপ্রিয়, তাও বুঝবে একটি উপন্যাসে ('শামুকের খোলা')। গোয়েন্দা উপন্যাস এখানে আছে অনেকগুলো, খুনোখুনি তো আছেই, সেই সঙ্গে আছে মজা। 'মার্ডার কেস' গল্পে খুনোখুনিতেও হাসি, 'নিজের ঘরে', উপন্যাসেও তাই, 'নিজে বুঝে নিন' উপন্যাসে হাসতে হাসতে চুরি, মামা-ভাগ্নের রসিকতা নিয়ে 'সুতোর টানে', 'গল্পই কি অল্প' গল্পে প্রভাবতী দেবী সরস্বতীর কৃষ্ণার মতো এক মেয়ে গোয়েন্দা। 'গোয়েন্দা গল্প আর কাকে বলে' উপন্যাসে সাহিত্যিক প্রলয় চাকলাদারের গোয়েন্দা গল্প লিখতে অজ্ঞাতবাসে গিয়ে যে মজার ঝামেলা হল, ভূ-ভারতে তারও কোনও তুলনা খুঁজে পাওয়া যাবে না।
গোটা বইতে হাসি, মজা আর বিচিত্র সব ঝামেলার হাট বসে গিয়েছে। এমন একখানা বই গায়ে-গতরে আরও বড়ো হলে যে খুব ভালো হত সে তো বটেই, কিন্তু যা পাওয়া গেল তাই বা মন্দ কী। একবার শুরু করলে আর ছাড়তে পারবে না, যদি রেখে বলা যায়। এ বই হাসতে হাসতে পড়বে, পড়তে পড়তে হাসবে।--হীরেন চট্টোপাধ্যায়
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি